যে সকল মানুষ গীতার জ্ঞান বুঝে না - সে বিষয়ে আজ জানব

যে সকল মানুষ গীতার জ্ঞান বুঝে না - সে বিষয়ে আজ জানব

এই জড়-জগতে কিছু মানুষ রয়েছে যারা ভগবদ্গীতার জ্ঞান গ্রহনের যোগ্য নয়। তাদের ভোগলোলুপ বিদ্বেষ পরায়ন ও আসুরিক মনোভাবই এর কারন।

ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন,

অহঙ্কারং বলং দর্পং কামং ক্রোধং পরিগ্রহম্৷
বিমুচ্য নির্মমঃ শান্তো ব্রহ্মভূয়ায় কল্পতে৷৷

অর্থ: অহংঙ্কার, বল, দর্প, কাম, ক্রোধ, পরিগ্রহ থেকে সম্পূর্ণরুপে মুক্ত, মমত্ববোধ শুন্য শান্ত পুরুষ আত্মজ্ঞান লাভে সমর্থ হন।।

(১৮ অধ্যায়, শ্লোক - ৫৩, শ্রীমদ্ভগবতগীতা)

যারা সংযমহীন এবং কখনও ধর্মাচরণ, ব্রতপালন বা তপো-চর্যা করেনি, তাদের কাছে ভগবদ্গীতার ব্যাখা করলেও তারা তার অর্থ বুঝতে পারে না। তারা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বা তার শুদ্ধভক্তের কখনও কোন সেবা করার চেষ্টা করেনি বরং তাদের বদনাম ও হিংসা করে বেড়ায়।

ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বলেছেন,

”ইদং তে নাতপস্কায় নাভক্তায় কদাচন,
ন চাশুশ্রুষবে বাচ্যং ন চ মাং যোহভ্যসুয়তি”।।
 
অনুবাদঃ যারা সংযমহীন, অভক্ত, পরিচর্যাহীন এবং আমার প্রতি বিদ্বেষ ভাবাপন্ন, তাদেরকে কখনও এই গোপনীয় জ্ঞান বলা উচিত নয়।

(অধ্যায় - ১৮, শ্লোক - ৬৭, শ্রীমদ্ভগবতগীতা)

যারা ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে কেবল একজন ঐতিহাসিক চরিত্র বলে মনে করে, যাদের অন্তর শ্রীকৃষ্ণের প্রতি ঈর্ষা-বিদ্বেষে পরিপুর্ন, তাদেরকে কখনই ভগবদ্গীতা শোনানো উচিত নয়। অবিশ্বাসী লোকেদের পক্ষে ভগবদ্গীতা ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে উপলদ্ধি করা অসম্ভব। যারা ইন্দ্রিয়সুখ ভোগে আসক্ত তারা ভগবদ্গীতা বুঝতে পারে না।

যারা সংযত, সদাচারী হয়েও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ভক্ত নন তারাও এই ভগবদ্গীতার জ্ঞান জানবে না।
যারা বাহিরে কৃষ্ণভক্তি দেখায় কিন্তু শ্রীকৃষ্ণের সেবায় যুক্ত নন তারা ভগবদ্গীতা জানতে পারে না।
যারা আসুরিক ভাবাপন্ন, কিছু অর্থ উপার্জনের জন্য গীতা পাঠ করে তারা ভগবদ্গীতার জ্ঞান জানে না।
যারা নাম, যশ ও সমাজে প্রতিষ্ঠার জন্য গীতার অপব্যাখ্যা সহ গীতা গ্রন্থ প্রকাশ করে তারা ভগবদ্গীতার তত্ত্বজ্ঞান হৃদয়ঙ্গম করেনি।

প্রিয় কৃষ্ণ ভক্ত আমরা কৃষ্ণ কথা গুলো আমরা সংগ্রহিত করি শুধু মাত্র আপনাদের মাঝে কৃষ্ণ প্রেম ভক্তি জাগানোর লক্ষে। যাতে করে সবাই নিজের ধর্মের কথা জানতে পারে ও কৃষ্ণ প্রেম ভক্তি হৃদয়ে জাগ্রত হয়। আমাদের যে কোনো রকম ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। হরে কৃষ্ণ......

ভগবদ্গীতা কেবল শ্রদ্ধাবান ভক্তদের জন্যঃ

যিনি শুদ্ধ কৃষ্ণভক্তের কাছ থেকে ভগবদ্গীতা হৃদয়ঙ্গম করে ভগবদ্গীতার যথার্থ তত্ত্ব প্রচারের চেষ্টা করবেন, তিনি শুদ্ধ ভগবদ্ভক্তি লাভ করবেন। এবং নিশ্চিতভাবে তিনি মৃত্যুর পর ভগবানের ধামে ফিরে যাবেন। পৃথিবীর সমস্ত মানুষের মধ্যে এই রকম গীতা প্রচারকারী ব্যক্তি পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নিকট সবচেয়ে প্রিয়।।

গীতার জ্ঞান বুজতে করনীয়ঃ

ত্রিবিধং নরকস্যেদং দ্বারং নাশনমাত্মনঃ৷
কামঃ ক্রোধস্তথা লোভস্তস্মাদেতত্ত্রয়ং ত্যজেত্৷৷

অর্থ: কাম, ক্রোধ এবং লোভ এই তিনটি নরকের দ্বার স্বরুপ। অতএব উত্তম ব্যক্তিরা এই তিনটি পরিত্যাগ করেন কারণ এগুলি আত্মাকে অধঃগামী করে।।

(অধ্যায় -১৬,শ্লোক - ২১, শ্রীমদ্ভগবতগীতা)

তাই নিজের সম্পূর্ন হিংসা, ঈর্ষা, লোভ, কামনা ত্যাগ করে একনিষ্ট ভক্তিনিষ্ট মন নিয়ে নিজেকে শ্রীকৃষ্ণের চরণে শরণ দিয়ে গীতা পড়া এবং আত্মস্থ করা।
No Comment
Add Comment
comment url