ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মবেশ পরিধানের বর্ণনা - Krishna Kotha
নটবর বেশ
পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ভক্তের ইচ্ছাপূরণের জন্য বিভিন্ন সময়ে নানা অপ্রাকৃত লীলার রচনা করেন। শ্রীধাম বৃন্দাবনে ব্রজ গোপীদের সাথে ভগবান সবচেয়ে মধুর লীলা আস্বাদন করেন।একবার লীলাপুরুষোত্তম শ্রীকৃষ্ণ ছল করে ব্রজগোপীদের সূর্যপূজার সামগ্রী হরণের জন্য ছদ্ধবেশ ধারণ করেছিলেন।তিনি ব্রজগোপীদের থেকে নন্দ মহা রাজের জন্য কর দাবী করছিলেন।কিন্তু ব্রজগোপীদের কাছে কৃষ্ণের ছদ্ধবেশ ধরা পরে যায়।ছল করার শাস্তি স্বরূপ গোপীকারা কৃষ্ণকে গোপীবেশে সাজিয়ে দেন এবং নৃত্য করতে বলেন।আর ভক্তের প্রাণনাথ লীলাধর কৃষ্ণ সেই গোপীবেশে নৃত্যকরেই গোপীদের আনন্দ বর্ধন করেছিলেন।নটবর কৃষ্ণের এই অনবদ্য নৃত্যরূপ ভক্ত হৃদয়ে আনন্দের সঞ্চার করে।
শ্রীকৃষ্ণের জন্মবেশ
পরমেশ্বর ভগবান তার ভক্তদের সাথে মুখ্য ৫টি রসে যুক্ত থাকে।তার মধ্যে একটি রস হলো বাৎসল্য।এই রসে ভগবান তার ভক্তদের সন্তান রূপে আনন্দ প্রদান করেন।ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দুজন প্রিয় ভক্ত নন্দমহারাজ ও যশোদা মাতার বাৎসল্য প্রেমে আকৃষ্ট হয়ে শ্রীকৃষ্ণ তাঁদের গৃহে আর্বিভূত হয়েছিলেন এবং সমস্ত বৃন্দাবনবাসীদের বিচিত্র ও অপ্রাকৃত লীলা বিলাসের মাধ্যমে আনন্দ প্রদান করেছিলেন।ভগবান যখন বৃন্দাবনে আবির্ভূত হন তখন তাঁকে দর্শন করতে বিভিন্ন গ্রহলোক থেকে দেব - দেবতারা এমনকি ব্রহ্মা,শিব এবং নারদ মুনিগণও এসেছিলেন।বৃন্দাবনের সমস্ত গোপীরা তাঁর দিব্যরূপে আকৃষ্ট হয়ে বিভিন্ন দ্রব্য সামগ্রী নিয়ে অভিষেক করতে আসেন,যেন নন্দ মহারাজের এই দিব্য পুত্রের সেবা করাই তাঁদের একমাত্র কাজ।
রাজাধিরাজ বেশ
ব্রজেন্দ্রনন্দন শ্রীকৃষ্ণ ব্রজবাসীদের প্রাণধন।শ্রীকৃষ্ণকে ঘিরেই তাঁদের সমস্ত কার্যকলাপ।কিন্তু ব্রজবাসীদের বিরহের সাগরে নিমজ্জিত করে বৃন্দাবন ছেড়ে কৃষ্ণ মথুরায় চলে যান।মথুরা থেকে কৃষ্ণ বলরাম দ্বারকাধীশ হয়ে রাজ্যভার সামলাচ্ছেন।এদিকে কৃষ্ণ অদর্শনে ব্রজগোপীদের প্রাণ নির্গত হওয়ার অবস্থা।একবার সূর্য গ্রহণের পুণ্যক্ষণে দ্বারকা থেকে সমস্ত মহিষীদের নিয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কুরুক্ষেত্রে আসেন স্নান করবার জন্য।একথা জানতে পেরে সমস্ত গোপীরা কুরুক্ষেত্রে আসেন।তাঁরা রাজবেশে রথারূঢ় কৃষ্ণকে দেখে খুবই মর্মাহত হন।শ্রীকৃষ্ণকে পুনরায় বৃন্দাবনে নিয়ে যাওয়ার জন্য রথ আকর্ষণ করতে থাকেন।রাজবেশে শ্রীকৃষ্ণের ব্রজবাসীদের সাথে মিলনের এই দৃশ্য পটই রাজাধিরাজবেশের দৃশ্যপট।
বনবিহারী বেশ
পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাঁর অপ্রাকৃত লীলার মাধ্যমে ব্রজবাসীদের সর্বদা আনন্দে মগ্ন রাখতেন এবং তাঁর প্রিয় ভক্তদের কাছে থেকে প্রীতিপূর্ণ উপহার গ্রহণ করতেন।একদিন কৃষ্ণ তার সখাদের সাথে বনে বিহার করতে গেলে তার প্রচণ্ড ক্ষুধা পায়।ফলে বনের অদূরে যজ্ঞ রত যাজ্ঞিক ব্রাহ্মণগণের কাছে কিছু অন্ন ভিক্ষা প্রার্থনা করলে তাঁরা তাদের প্রার্থনা গ্রাহ্য করে না।কিন্তু যখন সখারা ব্রাহ্মণ পত্মীদের কাছে নিবেদন করে আমাদের প্রাণসখা কৃষ্ণের অনেক ক্ষুধা পেয়েছে কিছু খাবার দেওয়ার জন্য।তখন ব্রাহ্মণ পত্মীরা নিজেরাই তাদের স্বামীর আদেশ প্রত্যাখ্যান করে কৃষ্ণের সেবা করার জন্য কৃষ্ণের কাছে গমন করে।ভগবানের প্রতি ভক্তের প্রেম এমনই হয় যে, সমস্ত বাধা অতিক্রম করেও তার কাছে পৌঁছে যায় এবং বনবিহারী বেশে ভগবানের দর্শন লাভ করে।
বৎসহরণ বেশ
ভগবান ভগবদ্গীতায় বলেছেন,আমার জন্ম এবং কর্ম দিব্য,অর্থাৎ তাঁর জন্ম এবং কর্ম সাধারণ জীব বুঝতে পারবে না।এমনকি ব্রহ্মা পর্যন্ত ভগবানকে বুঝতে পারেননি।তিনিও মোহিত হয়েছেন।তিনি ভগবানকে পরীক্ষা করার জন্য গোবৎস এবং গোপবালকদের হরণ করেছিলেন।তাই ভগবান ব্রহ্মার এই কার্যাবলী বুঝতে পেরে নিজের থেকে সেই একই রকম গোপবালক ও গোবৎস সৃষ্টি করে লীলাবিলাস করতে থাকেন।
গোমতিকৃষ্ণ বেশ
ভক্তরা সর্বদা ভগবানের সেবা করার জন্য ব্যাকুল থাকেন।ভগবানও ভক্তের সেবার জন্য উৎকণ্ঠিত থাকে।একদিন নন্দ মহারাজ তাঁর পাদুকা আনার জন্য কৃষ্ণকে নির্দেশ প্রদান করলেন।ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অনন্ত কোটি ব্রহ্মাণ্ডের অধিপতি হওয়া সত্ত্বেও নন্দমহারাজের পাদুকা মস্তকে ধারণ করে আনায়ন করলেন।ভক্তির পাঁচটি মূখ্য রস রয়েছে- শান্ত,দাস্য,সখ্য,বাৎসল্য,মধুর।এই লীলাটি বাৎসল্য রসের অন্তর্গত।
-------------------------------------------------------------------------------------------------
=========================================================
এই সাইটের সবস্ত কৃষ্ণ কথা সংগ্রহিত .................
ভুল ক্ষমা করবেন।শুধু মাত্র কৃষ্ণ ভক্তি ছড়িয়ে দেয়ার জন্য আমরা সংগ্রহ করে থাকি।
আমাদের কৃষ্ণ কথা সাইটে এসে কৃষ্ণ কথা পড়ে যদি কোনো রকম কিছু জানতে পারেন।
তাহলে আমাদের সপ্ন পূরণ হবে।
আপনার অনুভূতি কমেন্টর মাধ্যমে আমাদের জানাবেন।
-------------------------------------------------------------------------------------------------
=========================================================
খট-দোলি বেশ
পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বৃন্দাবনে তাঁর হ্লাদিনী শক্তি শ্রীমতি রাধারাণীর সাথে অপ্রাকৃত মাধুর্যলীলা প্রকাশ করেন।মাধুর্য ভাবময়ী গোপীকারা রাধাকৃষ্ণকে নিয়ে কখনও ঝুলনলীলার অবতারণা করেন।একবার বৃন্দাবনের কুসুম সরোবরের তীরে রাধাকৃষ্ণের ঝুলন লীলা রচনা করেছিলেন।শ্রীমতির শ্রীঅঙ্গের পদ্মগন্ধের সৌরভে কুঞ্জের ভ্রমরেরা আসতে থাকে।ভ্রমরদের দেখে শ্রীমতি তাঁর হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলেন।এক পর্যায়ে সখীরা ভ্রমরকে তাড়িয়ে দেন আর বলতে থাকে,হে রাধে,মধুসুদন চলে গেছে আর আসবে না।একথা শুনে শ্রীমতি মধুসুদনের (কৃষ্ণের) বিরহ অনুভব করতে থাকেন এবং ক্রন্দন করতে থাকেন।যদিও শ্রীকৃষ্ণ তার পাশেই বসেছিলেন।শ্রীমতির কান্না দেখে শ্রীকৃষ্ণও কান্না শুরু করেন।সেই সাথে গোপীকারাও কান্না করতে থাকেন।তাদের অশ্রুতে সেখানে এক কুণ্ডের সৃষ্টি হয়।প্রেমাশ্রু থেকে উৎপন্ন হয় বলে এই কুণ্ডের নাম হয় প্রেমসরোবর।আজকের ‘খট-দোলি’ বেশে অর্থাৎ ঝুলনলীলার মাঝে আমরা প্রেমসরোবরের সেই অপ্রাকৃত
লীলারূপ দর্শন করছি।
হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ
হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ
হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ
হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ
চক্রনারায়ণ বেশ
পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অনাদির আদি।তাঁর থেকেই প্রকাশিত হয় অনন্ত সৃষ্টি।পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের থেকেই প্রকাশিত হয় সৃষ্টির পালন কর্তা শ্রীবিষ্ণু।গর্ভদোকশায়ী বিষ্ণু হলেন পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দ্বিতীয় পুরুষাবতার।ক্ষীরদোকশায়ী বিষ্ণুর পত্নী শ্রীলক্ষ্মী দেবী হলেন শ্রীমতি রাধারাণীর অংশ প্রকাশ।শঙ্খ, চক্র, গদা, পদ্মধারী শ্রীবিষ্ণুর নাভিকমল থেকে প্রকাশিত হলো সৃষ্টির প্রথম জীব তথা সৃজনকর্তা ব্রহ্মা।ক্ষীরদসাগরে অনন্ত শয্যায় শায়িত শ্রীবিষ্ণুর পাদসেবায় রত শ্রীলক্ষ্মীদেবী।শিব,ব্রহ্মা,নারদ,গরুড় সকলে তাঁর প্রার্থনায় রত।উজ্জ্বল সুদর্শন চক্রধারী সেই বিষ্ণুরূপই চক্রনারায়ণ বেশ।
নৌকেলি বেশ
পরমেশ্বর ভগবান হলেন এক ও অদ্বিতীয়। সৎ, চিৎ ও আনন্দময় বিগ্রহ।তিনি আত্মারাম হলেও তাঁর ভক্তের অধীন হয়ে থাকেন।অনেকে বলেন বাস্তবে ভগবান শ্রী কৃষ্ণ হচ্ছেন নারায়ণের অবতার,কিন্তু স্বয়ং ভগবান শ্রী কৃষ্ণ হচ্ছেন সমস্ত অবতারের অবতারি,এবং ভগবান শ্রী কৃষ্ণ থেকে স্বয়ং নারায়ণ উৎপন্ন হয়েছেন ওনার অংশ আজ তার প্রমাণ আপনাদের দেব,অবশ্যই শাস্ত্র থেকে!!কয়েকটি শ্লোক তুলে ধরলাম,স্বয়ং ব্রহ্মা বলছেন ভগবান শ্রী কৃষ্ণ কে।।
শ্লোক ৫৬
সেই তিন জনের তুমি পরম আশ্রয়।
তুমি মূল নারায়ণ ইথে কি সংশয়॥৫৬॥শ্লোকার্থ
“তুমি হচ্ছ সেই তিন পুরুষাবতারের পরম আশ্রয়।সুতরাং তুমিই যে মূল নারায়ণ,সেই বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।
তাৎপর্য
ব্রহ্মা এখানে তাঁর উক্তির মাধ্যমে প্রতিপন্ন করেছেন যে,ভগবান শ্রীকৃষ্ণই হচ্ছেন পরমেশ্বর এবং তিন পুরুষাবতার ক্ষীরােদকশায়ী বিষ্ণু,গর্ভোদকশায়ী বিষ্ণু ও কারণােদকশায়ী বিষ্ণুর মূল উৎস।তার লীলাবিলাসের জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজেকে প্রথমে বাসুদেব,সঙ্কৰ্ষণ,প্রদ্যুম্ন ও অনিরুদ্ধরূপে প্রকাশ করেন এবং এই চার প্রকাশই (চতুৰ্বহ) হচ্ছেন ভগবানের আদি প্রকাশ।কারণ-সমুদ্রে শায়িত সমগ্ৰ জড় শক্তি বা মহৎ-তন্ত্রের স্রষ্টা প্রথম পুরুষাবতার মহাবিষ্ণুর প্রকাশ হয় সঞ্চৰ্ষণ থেকে,দ্বিতীয় পুরুষাবতার গর্ভোদকশায়ী বিষ্ণুর প্রকাশ হয় প্রশ্ন থেকে এবং তৃতীয় পুরুষাবতার ক্ষীরােদকশায়ী বিষ্ণুর প্রকাশ হয় অনিরুদ্ধ থেকে।এই তিন পুরুষাবতার নারায়ণ থেকে উদ্ভূত প্রকাশসমুহের সমপর্যায়ভুক্ত।নারায়ণ প্রকাশিত হন স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ থেকে।
এই সাইটের সবস্ত কৃষ্ণ কথা সংগ্রহিত .................
ভুল ক্ষমা করবেন।শুধু মাত্র কৃষ্ণ ভক্তি ছড়িয়ে দেয়ার জন্য আমরা সংগ্রহ করে থাকি।
আমাদের কৃষ্ণ কথা সাইটে এসে কৃষ্ণ কথা পড়ে যদি কোনো রকম কিছু জানতে পারেন।
তাহলে আমাদের সপ্ন পূরণ হবে। আপনার অনুভূতি কমেন্টর মাধ্যমে আমাদের জানাবেন।
আরো জানতে কিক্ল করুন
হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ
হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ
হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ
হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ হরে কৃষ্ণ জয় রাধে গোবিন্দ