ভীষ্মপঞ্চক ব্রত কথা নিয়ে বিস্তারিত জানব হরে কৃষ্ণ - Krishno Kotha

ভীষ্মপঞ্চক ব্রত কথা নিয়ে বিস্তারিত জানব হরে কৃষ্ণ - Krishno Kotha

ভীষ্মপঞ্চক ব্রত কি

পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অভিন্ন প্রকাশ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর পার্ষদপ্রবর ও গৌড়ীয় আচার্যবর্গের অন্যতম শ্রীল সনাতন গোস্বামীপাদ শ্রীশ্রীহরিভক্তিবিলাস গ্রন্থে (১৬/৪৩৪) লিখেছেন-

আরভ্যৈকাদশীং পঞ্চ দিনানি ব্রতমাচরেৎ।
ভগবৎপ্রীতয়ে ভীষ্মপঞ্চকং যদি শক্নুয়াৎ।।

অর্থাৎ, "কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীর হতে আরম্ভ করে (পূর্ণিমা পর্যন্ত) পাঁচদিন শ্রীভগবানের প্রীতির জন্য যদি সমর্থ হয়, ভীষ্মপঞ্চক ব্রত আচরণ করবেন।"

চাতুর্মাস্যের শেষ মাস অর্থাৎ কার্তিক তথা দামোদর মাসের বিশেষ খাদ্যতালিকা থাকে, যে অনুযায়ী কেউ পঞ্চগব্য অথবা ফলমূল অথবা হবিষ্যান্ন গ্রহণ করতে পারেন। এই ব্রত অনুষ্ঠানকারী ব্যক্তিকে ভগবৎপ্রেম প্রদান করে-

সর্বপাপবিনির্মুক্তঃ প্রাপ্তকামো হরিং ব্রজেৎ।।
(গরুরপুরাণ, পূর্ব খণ্ড ১২৩.২)।

বাসুদেব শ্রীকৃষ্ণ বা শ্রীবিষ্ণুর প্রীতিপ্রদ বলে একে বিষ্ণুপঞ্চকও বলা হয়। সর্বধিক ব্রতের মধ্যে চাতুর্মাস্য ব্রত প্রধান, আর চাতুর্মাস্য ব্রত অপেক্ষা ভীষ্মপঞ্চক ব্রত সর্বপ্রধান।

আরো জাুনন....


ভীষ্মপঞ্চক ব্রত কিভাবে এলোঃ-

ভীষ্মপঞ্চক ব্রত প্রসঙ্গে স্কন্দপুরাণের বিষ্ণুখণ্ডে, কার্তিকমাসমাহাত্ম্যে ৩২ তম অধ্যায়ের বর্ণনা অনুসারে- সত্যযুগের আদিতে ভিগু, গর্গ ও বশিষ্ঠাদি ঋষিগণ এবং ত্রেতাযুগের প্রথমে অম্বরীষ ও ভোগ প্রভৃতি নৃপগণ চাতুর্মাস্যের শেষ মাস অর্থাৎ, কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষে এই ব্রতাচরণ করেছিলেন। পরবর্তীকালে মহারাজ শান্তনুতনয় ভীষ্ম ভগবান বাসুদেবের নিকটে এই ব্রত প্রাপ্ত হন।

মহাত্মা ভীষ্ম শরশয্যায় শয়ণ করে পরপর রাজধর্ম, মোক্ষধর্ম ও দানধর্ম কীর্তন করেন; পাণ্ডবগণ ভীষ্মভাষিত সেই ধর্মতত্ত্ব শ্রবণ করেন; এমনকি কৃষ্ণও তা শ্রবণ করেন। তখন ভীষ্মভাষিত ধর্ম শ্রবণে মনে মনে প্রীত হয়ে শ্রীকৃষ্ণ বলেন-"হে ভীষ্ম, তুমি ধন্য, তুমি ধন্য; কেননা, তুমি আজ আমাদের শ্রেষ্ঠ ধর্ম শ্রবণ করিয়েছ।
 
তুমি কার্তিক মাসের একাদশী দিবসে জল যাঞ্চা করেছিলে, অর্জুন বানবেগে গঙ্গাজল আনায়নপূর্বক তোমার শরীর শীতল করেছেন। এতএব, তদবধি সকলেই কার্তিকের শুক্লা একাদশী হতে পূর্ণিমা পর্যন্ত অর্ঘ্যদানে তোমার সন্তোষ সাধন করবে। অতএব, সকলেই সর্ব প্রযত্নে আমার প্রীতিপ্রদ এই ভীষ্মপঞ্চক নামক ব্রত আচারণ করুক।

কার্তিক ব্রত করে যে নর এই ভীষ্মপঞ্চক ব্রত না করে, তার সমগ্র কার্তিক ব্রত বিফল হয়ে থাকে। মানব যদি কার্তিক ব্রত করতে অসমর্থ হয় তবে কেবল ভিষ্মপঞ্চক করে সমগ্র কার্তিকের ফল লাভ করতে পারে।"পদ্মপুরাণের উত্তরখণ্ডে (১২৪/২৯-৩০) বলা হয়েছে-

ভীষ্মেণৈতদ্যতঃ প্রাপ্তং ব্রতং পঞ্চদিনাত্মকম্।।
সকাশাদ্বাসুদেবস্য তেনোক্তং ভীষ্মপঞ্চকম্।

"ভগবান বাসুদেবের নিকট থেকে ভীষ্মদেব এই পঞ্চদিনাত্মক ব্রত প্রাপ্ত হয়েছেন তাই তা ভীষ্মপঞ্চক ব্রত নাবে অভিহিত।"

ব্রতানাং মুনিশার্দ্দূল প্রবরং বিষ্ণুপঞ্চকম্।
সমস্মিন যঃ পূজয়েদ্ভক্ত্যা শ্রীহরিং রাধয়া সহ।।
গন্ধপুষ্পের্ধূপদীপৈর্বস্ত্রৈর্নানাবিধৈঃ ফলৈঃ।
স যাতি বিষ্ণুসদনং সর্ববিবর্জিতঃ।।
(পদ্মপুরাণ, স্বর্গখণ্ড ৪৮/৩-৪)

অর্থাৎ, বিষ্ণুপঞ্চক ব্রত ব্রতসমূহের মধ্যে প্রবর। সেসময় যিনি ভক্তিসহকারে গন্ধ, পুষ্প, ধূপ, দীপ, বস্ত্র ও নানাবিধ ফল দ্বারা শ্রীরাধাসহ শ্রীহরিকে অর্চনা করেন, তিনি সর্বপাপ বিবর্জিত হয়ে বিষ্ণুসদনে গমন করেন।"


প্রিয় কৃষ্ণ ভক্ত আমরা কৃষ্ণ কথা গুলো আমরা সংগ্রহিত করি শুধু মাত্র আপনাদের মাঝে কৃষ্ণ প্রেম ভক্তি জাগানোর লক্ষে। যাতে করে সবাই নিজের ধর্মের কথা জানতে পারে ও কৃষ্ণ প্রেম ভক্তি হৃদয়ে জাগ্রত হয়। আমাদের যে কোনো রকম ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। হরে কৃষ্ণ.....

পত্র পুষ্প অর্পণ বিধিঃ-

গতকালে শ্রীশ্রীরাধাকৃষ্ণ ভগবানের অন্য যেকোন রূপের শ্রীবিগ্রহকে ঘৃত প্রদীপ পুষ্প নিবেদন করা উচিত। ভগবানের শ্রীবিগ্রহ প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন পুষ্প নিবেদনের নিয়ম রয়েছে। এ প্রসঙ্গে গরুড়পুরাণ, পূর্ব খণ্ড ১২৩ অধ্যায়ে (৮-৯) বলা হয়েছে-

প্রথমেহহ্নি হরেঃ পাদৌ যজেৎ পদ্মৈর্দ্বিতীয়কে।
বিল্বপত্রৈর্জানুদেশেং নাভিং গন্ধেন চাপরে।।
সন্ধৌ বিল্বজবাভিশ্চ পঞ্চমেহহ্নি শিরোহর্চয়েৎ।
মালত্যা ভূমিশায়ী স্যদেগাময়ং প্রাশয়েৎ ক্রমাৎ।।

১ম দিনঃ- পদ্মফুল- চরণকমলে
২য় দিনঃ- বিল্বপত্র- জানুতে
৩য় দিনঃ- গন্ধদ্রব্য- নাভিকমলে
৪র্থ দিনঃ- বিল্বপত্র ও জবাফুল- স্কন্ধদেশে
৫ম দিনঃ- মালতীফুল- শিরোদেশে

যদি কখনো দুটো তিথি একদিন পড়ে, তবে ঐদিন দুদিনের উদ্দিষ্ট ফুলগুলো একই দিনে নিবেদন করতে পারেন। আর যদি কারো নিকট ফুলগুলো না থাকে তবে ভগবানের নির্ধারিত স্থানে নির্ধারিত ফুলগুলো কেউ মানসিকভাবে নিবেদন করতে পারেন।


আহার বিধিঃ-

ব্রতকারী কতবার আহার গ্রহণ করতে পারে সে ব্যাপারে নির্ধারিত কোনো কিছু উল্লেখ নেই। ভীষ্মপঞ্চক ব্রত ব্যক্তির সামর্থ অনুসারে বিভিন্ন স্তরে উদযাপন করা যায়- কথা পদ্মপুরাণে (সর্গখণ্ড ৪৮/১৫) বলা হয়েছে-

এবং কর্ত্তুমশক্তে ষঃ ফলমূলঞ্চ ভোজনম্।
কুর্য্যাদ্ধবিষ্যং বা বিপ্র যথোক্তবিধিনা হ বৈ।।

সাধারণত একাদশীতে সম্পূর্ণ উপবাস এবং তার পরবর্তী চারদিন ফলমূল গ্রহণ করতে বলা হয় অথবা কেউ পাঁচদিনই ফলমূল গ্রহণ করতে পারেন। ভক্তরা তাদের সুবিধামতো নিম্নোক্ত স্তরগুলোর যেকোনটি অনুসরন করতে পারেন, যেন তাদের সাধারণ ভক্তিমূলক সেবা ও দৈনন্দিন সাধনায় বিঘ্ন সৃষ্টি না করে।

১ম স্তর-পঞ্চগব্য গ্রহণ 
পঞ্চগব্য একেকটি একেক দিনে গ্রহণ করা যেতে পারে (গ.পু. পূর্ব ১২৩/১০; প. পু. সর্গ ৪৮/১১-১৪; স্কন্দ. পু. কার্তিকমাসমাহাত্ম্য ৩২/৪৬, ৪৭, ৫০)।

১ম দিনঃ- গোময়
২য় দিনঃ- গোমূত্র
৩য় দিনঃ- দুধ
৪র্থ দিনঃ- দধি
৫ম দিনঃ- গোময়, গোমূত্র, দুগ্ধ, দধি ও ঘিয়ের মিশ্রণে তৈরি পঞ্চগব্য।

২য় স্তর-ফলমূল গ্রহণ

যদি কেউ ১ম স্তর অনুসরণ করতে না পারেন, তবে ফলমূল গ্রহণ করা যেতে পারে। অধিকাংশ ব্যক্তি ফলমূল গ্রহণ করেন। তাই আলু, মূল এবং ফল যেমন কলা, আপেল, কূল, পানিফল, বাদাম, আখরোট, হেলেনটস, কাজুবাদাম, কিসমিস ও খেজুর খাওয়া যেতে পারে।

বিভিন্ন ফলের মতো এগুলো ফল হিসেবে বিবেচিত হয়। আখের রস এবং ইক্ষুদ্রব্য যেমন মিছরি গ্রহণ করা যাবে। কিন্তু গুঁড় এবং মেলাসেস অনুমোদিত নয়। আলু, কাঁচকলা বা মিষ্টি আলু সেদ্ধ করে গ্রহণ করা যেতে পারে। স্বাদের জন্য সৈন্ধব লবণ ব্যবহার অনুমোদিত। তবে দুধ বা দুগ্ধজাত কোন দ্রব্য গ্রহন করা যাবে না। নারকেল ও নারকেলের জল গ্রহণ করা যাবে।

৩য় স্তর-হবিষ্যান্ন গ্রহণ

যদি কেউ ২য় স্তর পালনে অসমর্থ হন, তবে হবিষ্যান্ন গ্রহণ করতে পারেন। গৌড়ীয় আশ্চর্যবর্গের অন্যতম শ্রীল সনাতন গোস্বামীকৃত শ্রীশ্রীহরিভক্তিবিলাস গ্রন্থের ১৩ অধ্যায় ১০-১৩ নং শ্লোকে হবিষ্যান্নের উপাদান উল্লেখ করা হয়েছে। নিম্নোক্ত উপাদানগুলো হবিষ্যান্ন তৈরিতে ব্যবহার করা যাবে।

হবিষ্য সাধারণত আতপ চাল এবং মুগ ডাল দিয়ে তৈরি করা হয়। যারা একাদশী থেকে একাদশী পর্যন্ত চাতুর্মাস্য পালন করেছেন, নিয়মানুযায়ী তাদের কার্তিক মাস একাদশী পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছে, তাই তারা তাদের হবিষ্যে মুগ ডাল গ্রহণ করতে পারেন। তবে অধিকাংশ ভক্তগণ পূর্ণিমা থেকে পূর্ণিমা পর্যন্ত চাতুর্মাস্য ব্রত পালন করেন, তাই ভীষ্মপঞ্চক এর হবিষ্যে মুগ ডাল অনুমোদিত হবে না এবং সকল প্রকার তেল পরিত্যাজ্য।

আতপ চাল, ঘি, সৈন্দব লবন, পাকা কলা, কাল শাক, গম, বার্লি-এই উপাদানগুলো গ্রহণ করা যেতে পারে। এছাড়া নিম্নোক্ত ফলসমূহ গ্রহণ করা যেতে পারে।

ফল (স্কন্দপুরাণে নাগরখণ্ডে অবশ্যই একটি বীজের অথবা কম বীজম্পূর্ণ ফলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে) আম, কাঁঠাল, লাবালী ফল, কেয়া ব্যাতীত সকল মূল, পিপলী, হরিতকি, আমলকি, নরাঙ্গ, ইক্ষুদ্রব্য (গুড় ব্যতীত) ননীপূর্ণ গোদুগ্ধ।

প্রিয় কৃষ্ণ ভক্ত আমরা কৃষ্ণ কথা গুলো আমরা সংগ্রহিত করি শুধু মাত্র আপনাদের মাঝে কৃষ্ণ প্রেম ভক্তি জাগানোর লক্ষে। যাতে করে সবাই নিজের ধর্মের কথা জানতে পারে ও কৃষ্ণ প্রেম ভক্তি হৃদয়ে জাগ্রত হয়। আমাদের যে কোনো রকম ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। হরে কৃষ্ণ.....

হবিষ্যান্নে বর্জনীয় দ্রব্যসমূহঃ-

নিম্নবর্ণিত দ্রব্যগুলো হবিষ্যান্নের অন্তর্ভুক্ত হলেও তা কার্তিক মাসে বর্জন করতে বলা হয়েছে। যথা মুগ ডাল, তিল তেল, বেতো শাক, সাত্ত্বিক শাক, মূলা, জিরা, তেঁতুল।

তর্পণবিধি ও মন্ত্রাবলিঃ-

এছাড়া প্রতিদিন গঙ্গার মত পবিত্র নদীতে স্নান ও তর্পণ করা উচিত। তর্পণ করার সময় উপবীতকে পেছনদিকে নিয়ে (যাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য) এবং উভয় হাতে জল নিতে হয়; মন্ত্র উচ্চারণ করা হয় এবং দুই হাত ডান দিকে ও নিচে কাত করে নিবেদন করা হয়, যাতে জল ডান বৃদ্ধাঙ্গুলির নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এটি পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যের নৈবেদ্য নিবেদনের একটি উপায়। তবে, ভীষ্মপঞ্চকে তা ভীষ্মদেবের উদ্দেশ্য করা হয়, যা স্কন্দপুরাণের বিষ্ণুখণ্ডে কার্তিকমাসমাহাত্ন্যে (৩২/৯) 
বলা হয়েছে-

ভীষ্মায়ৈতদ্দদাম্যর্ঘমাজন্মব্রহ্মচারিণে। 
এই তর্পনে সকল বর্ণেরই সমান অধিকার- তর্পণং সার্ববর্ণিকম্ (৩২/১০)।

নিম্নলিখিত মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে তিনবার ভীষ্মদেবের উদ্দেশ্যে তর্পন করা উচিত:

তর্পন মন্ত্রঃ-

ওঁ বৈয়াগ্রপদ্য গোত্রায় সংস্কৃতি প্রবরায় চ।
অপুত্রায় দদাম্যেতৎ সলিলং ভীষ্মবর্মনে।।

অর্ঘ্যঃ

বসুনামাবতারায় শান্তনোরাত্মাজায় চ।
অর্ঘ্যং দদামি ভীষ্মায় অাজন্ম ব্রহ্মচারিণে।।


প্রণামঃ
ওঁ ভীষ্ম শান্তনবো বীরঃ সত্যবাদী জিতেন্দিয়ঃ।
অভিরদ্ভিরবাপ্নোতু পুত্রপৌত্রচিতাং ক্রিয়াম্।।

কারো প্রশ্ন হতে পারে যে, যাদের পিতা জীবিত, তারাও কি তর্পন করতে পারবে? এক্ষেত্রে বুঝতে হবে যেহেতু এই ব্রতের তর্পণ ভীষ্মদেবের উদ্দেশ্যে করা হয়, কারো পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে নয়; সুতরাং যে কেউ তর্পন করতে পারেন। আর যদি কেউ গঙ্গা স্নান ও তর্পন করতে যেতে না পারেন, অর্থাৎ, যদি কারো কাছাকাছি কোনো পবিত্র নদী না থাকে, তবে তিনি "গঙ্গা গঙ্গা গঙ্গা উচ্চারণ করে তথা গঙ্গা নাম স্মরণ করে এই পবিত্র নদীতে স্নান করার সুফল লাভ করতে পারেন, যা যে কোন স্থানেই করা সম্ভব-

গঙ্গেতি নাম সংস্মৃত্য যস্তু কূপজলেহপি চ।
করোতি মানবং স্নানং গঙ্গাস্নানফলং লভেৎ।।
(পদ্মপুরাণ, ক্রিয়াযোগসার, ৬/১১)

এছাড়া ভগবানের শ্রী বিগ্রহের উদ্দেশ্য প্রতিদিন প্রদীপ নিবেদন করা উচিত। ভীষ্ম পঞ্চক গোবিন্দের নিকট বিশেষ প্রিয় এবং এর ফলে কেউ অতি সহজে কৃষ্ণভক্তি লাভ করতে পারেন।



প্রিয় কৃষ্ণ ভক্ত আমরা কৃষ্ণ কথা গুলো আমরা সংগ্রহিত করি শুধু মাত্র আপনাদের মাঝে কৃষ্ণ প্রেম ভক্তি জাগানোর লক্ষে। যাতে করে সবাই নিজের ধর্মের কথা জানতে পারে ও কৃষ্ণ প্রেম ভক্তি হৃদয়ে জাগ্রত হয়। আমাদের যে কোনো রকম ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। হরে কৃষ্ণ.....

পারণঃ-

পূর্ণিমার দিন তথাগত শেষদিন সূর্যাস্তের পর এবং কর্ণদ্বয়ের সময় ব্রতের পারন করতে হবে। সেদিন বিকেলের প্রসাদ না পেলেই ভালো; কেননা কিছুক্ষণ পরেই ব্রত শেষ হবে এবং তখন মহাভোজ হবে। গতকালই প্রথমে পঞ্চগব্য পান করে তারপর আহার করবে-
 
ততো নক্তং সমশ্নীয়াৎ পঞ্চগব্যপুরঃসরম্।
স্কন্দপুরাণ বিষ্ণুখণ্ডে, কার্তিকমাসমাহাত্ম্য (৩২.৫০)।

কেউ কেউ প্রশ্ন করেন, ভীষ্মপঞ্চক ব্রতকালে একাদশীর দিন উপবাস করার পর দিন কী খেয়ে পালন করা উচিত?

উত্তরে বলা যায় যে আমরা একটি সংকল্প করি যে আমরা ভীষ্মপঞ্চক পালন করছি। সংকল্প করার মাধ্যমে এই একাদশী পালনের দিনটিও স্বাভাবিকভাবেই ভীষ্মপঞ্চক ব্রতের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। কেউ যদি হবিষ্যান্ন গ্রহণ করে প্রথম পালন করেন তবে একাদশীর পারন হিসেবে দ্বিতীয় দিন দানা গ্রহণ করতে পারেন। ১ম ও ২য় স্তরের ক্ষেত্রে যেহেতু পাঁচ দিন দানা গ্রহণ নিষিদ্ধ, সে ক্ষেত্রে ৫ম দিন ব্রতের পালন করবেন। তবে কেউ যদি সত্যিই এ ব্যাপারে চিন্তিত হন তবে তিনি একাদশীতে নির্জলা উপবাস করতে পারেন এবং জল গ্রহণ করে পারন করতে পারেন।

ভিষ্মপঞ্চক ব্রতের উদ্দেশ্যঃ-

যেহেতু উদ্দেশ্যটি হলো আমাদের নিয়মিত ভগবদ্ভক্তি চালিয়ে যাওয়া, এমন নয় যে, আমি উপবাস করছি, তাই আমি কিছু করব না। যাদের ডায়াবেটিস আছে অথবা যারা সম্পূর্ণ উপবাস করতে পারবেন না তারা হবিষ্যান্ন পেতে পারেন। যে ব্যাপারটি চিত্তাকর্ষক তাহলো ভীষ্মদেব তার পিতার কারণে বিবাহ না করার প্রতিজ্ঞা করেছেন। এর পেছনে এক বৃহৎ কাহিনী রয়েছে। 

প্রার্থনা আছে, আজন্ম ব্রহ্মচারিণে, আমরা তার জন্য তর্পণ করছি তার কোন সন্তান নেই, তিনি কখনো বিবাহ করেননি। তাই এটি আশ্চর্যজনক যে, কিভাবে সারা ভারত এবং সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষ ভীষ্মদেবের জন্য ভীষ্মপঞ্চক করছেন এবং তার তর্পণ করছেন; কিন্তু তাঁর কোন সন্তান নেই এবং তিনি গঙ্গা মাতার সন্তান। তাই যখন ভক্তরা গঙ্গায় যান, গঙ্গাদেবী প্রসন্ন হন যে তার পুত্র সম্মানপ্রাপ্ত হচ্ছেন। এভাবে এই ব্রথের ফলে মাতাগঙ্গা, মহাত্মা ভীষ্মদেব এবং সর্বোপরি পরমেশ্বর ভগবান প্রসন্ন হন। আর তাকে প্রসন্ন করাই সমস্ত যজ্ঞ, দান, ব্রত বা তপস্যার মুখ্য উদ্দেশ্য।

[উৎসঃ পদ্মপুরাণ, উত্তরখণ্ড ১২৪ অধ্যায়; প.পু. সর্গখণ্ড ৪৮ অধ্যায়; স্কন্দপুরাণ, বিষ্ণুখণ্ড-কার্তিকমাসমাহাত্ন্য, ৩২ অধ্যায়; গরুরপুরাণ, পূর্ব খণ্ড ১২৩ অধ্যায়।]

প্রিয় কৃষ্ণ ভক্ত আমরা কৃষ্ণ কথা গুলো আমরা সংগ্রহিত করি শুধু মাত্র আপনাদের মাঝে কৃষ্ণ প্রেম ভক্তি জাগানোর লক্ষে। যাতে করে সবাই নিজের ধর্মের কথা জানতে পারে ও কৃষ্ণ প্রেম ভক্তি হৃদয়ে জাগ্রত হয়। আমাদের যে কোনো রকম ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। হরে কৃষ্ণ.....
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url