ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ভজনা বিচ্যুত হই তবে কি হবে - Krishno Kotha
অর্জুন জিজ্ঞাসা করিলেন, হে কৃষ্ণ! যিনি প্রথমে শ্রদ্ধা পূর্বক যোগ করিতে আরম্ভ করেন, কিন্তু পরে তেমন যত্ন না করায় যোগ হইতে ভ্রষ্ট হন, যোগে সিদ্ধি লাভ না করায় তাহার কী গতি হয়? (৩৭/অ:৬)ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কহিলেন, হে অর্জুন! ইহলোক বা পরলোকে কোথাও তাহার বিনাশ হইতে পারে না। কারণ কেহ ভালো কর্ম করিলে তাহার মন্দ গতি হইতে পারে না।।
সেই যোগী যোগের পথ হইতে ভ্রষ্ট হইলেও পূণ্যবান ব্যক্তি যে লোকে যান, সেই লোকে বাস করিয়া, পরে সদাচার সম্পন্ন ধনীর ঘরে জন্ম নেন। অথবা কোনো জ্ঞানী যোগীর বংশেও তিনি জন্ম নিতে পারেন, এই রূপ যোগীর ঘরে জন্ম নেওয়া খুবই দুর্লভ।।এই ভাবে জন্ম নিয়া তিনি আগের জন্মের সাধনায় যে জ্ঞান পাইয়া ছিলেন, তাহা আবার পান এবং সিদ্ধিলাভ করার জন্য আগের চেয়ে অনেক বেশি যত্ন করিতে থাকেন।।
সেই যোগ ভ্রষ্ট ব্যক্তি মুক্তির জন্য নিজে যত্ন না করিলেও পূর্ব জন্মের সংস্কার বলে যোগের প্রতি আকৃষ্ট হন। তিনি যদি যোগ কি তাহা শুধু জানিবার জন্য যোগে প্রবেশ করেন, তবুও তাহার কর্ম করিবার দরকার হয় না, তিনি ধীরে ধীরে জ্ঞানের পথে উঠিয়া যান।।কিন্তু যে যোগী (পূর্বজন্মে যোগভ্রষ্ট হওয়া) যোগের জন্য আরও বেশি যত্ন করেন, তাহার পাপ ক্রমে দূর হইয়া যায়, তারপর তিনি অনেক জন্মের সাধনাবলে পরমগতি লাভ করেন।।
যোগী তপস্বীর চেয়ে বড়, শাস্ত্রে যাহারা পন্ডিত, তাহাদের চেয়েও বড় এবং যাগযজ্ঞ কর্ম যাহারা করিয়াছেন, তাহাদের চেয়েও বড়ো। হে অর্জুন! তাই তোমাকে যোগী হইতে বলি।। যোগীদের মধ্যে আবার যে যোগী ভক্তির সঙ্গে আমাতেই মন স্থির রাখিয়া আমার সেবা করেন, তিনিই শ্রেষ্ঠ যোগী এবং আমার অত্যন্ত প্রিয় বলিয়া জানিবে।।
(শ্লো:৪৭/অ:৬)কৃষ্ণ ভক্তের সংবিধান ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উপদেশ শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা। যা তিনি মানুষের কল্যাণে পাঁচ হাজারের বেশি বছর আগে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুনকে দিয়ে ছিলেন। যা আজও মানুষের মনে প্রেরণা জোগায়। গীতা পাঠ বা শ্রবণ না করলে এই সত্য উপলব্ধি করা সম্ভব নয়।।