মহাপাপী জগাই মাধাইয়ের উদ্বার - Krishno Kotha

মহাপাপী জগাই মাধাইয়ের উদ্বার ( বিস্তারিত ) ভগবান শ্রী কৃষ্ণ আমার প্রাণ, কৃষ্ণ নামের মহিমা


কৃষ্ণলোকের শ্বেতদ্বীপ বৃন্দাবন ধাম থেকে অভিন্ন,যেখানে শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং আবির্ভূত হয়ে তার প্রেমময়ী লীলাবিলাস করেন।প্রত্যেক ব্রম্মান্ডের অন্তর্গত শ্বেতদ্বীপে ভগবানের শেষমুর্ত্তি ছত্র, পাদুকা,শয্যা,উপাধান,বসন,আবাস,যজ্ঞসুত্র, সিংহাসন প্রভৃতিরুপে বলরাম শ্রীকৃষ্ণের সেবা করেন।কৃষ্ণলোকে বলদেবই হচ্ছেন শ্রীনিত্যানন্দ প্রভু।তাই নিত্যানন্দ প্রভু হচ্ছেন মুল সঙ্কর্ষণ। পরব্যোমে মহাসঙ্কর্ষণ এবং তার পুরুষাবতারগন শ্রীনিত্যানন্দ প্রভুর অংশ ও কলা।নিত্যানন্দ প্রভু নবদ্বীপ মায়াপুরের শ্রীবাস অঙ্গনে ছিলেন।নিত্যা নন্দ প্রভুই শ্রীচৈতন্যমহাপ্রভুকে ব্যাসাসনে বসিয়ে গৌরসুন্দরের ব্যাসপুজা করলেন।

তার কয়েকদিন পর শচীমাতা এক অপুর্ব স্বপ্ন দর্শন করলেন যে,গৌর-নিতাই সাক্ষাৎ বৃন্দাবন লীলার কৃষ্ণ-বলরাম।এই স্বপ্নকথা শচীমা নিমাইকে বললে প্রভু বললেন,''আজ তাহলে নিত্যানন্দকে আমাদের ঘরে ভোজন করতে বলি''।এরপর নিত্যানন্দ প্রভু কে শচীঅঙ্গনে নিমন্ত্রন করে ঘরে আনলেন।ভৃত্য ঈশান প্রভুদ্বয়ের পাদ ধৌত করে দিলেন।শচীমাতা দুই ভাই গৌর-নিতাইকে আদর করে ভোজন করালেন।কিন্তু শচীমাতা দেখলেন গৌর-নিতাই ব্রজের কানাই-বলাই রুপে ভোজন করছেন। কিন্তু শচীমাতা এই রহস্য আর কাউকে বলেন নি।

প্রিয় কৃষ্ণ ভক্ত আমরা কৃষ্ণ কথা গুলো আমরা সংগ্রহিত করি শুধু মাত্র আপনাদের মাঝে কৃষ্ণ প্রেম ভক্তি জাগানোর লক্ষে। যাতে করে সবাই নিজের ধর্মের কথা জানতে পারে ও কৃষ্ণ প্রেম ভক্তি হৃদয়ে জাগ্রত হয়। আমাদের যে কোনো রকম ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। হরে কৃষ্ণ......

এরপর শ্রীচৈতন্যমহাপ্রভু হরেকৃষ্ণ মহা আন্দোলনের ডাক দিলেন।এবং নিত্যানন্দ প্রভু ও হরিদাস ঠাকুরকে ডেকে এনে আহবান করে বললেন,

''শুন শুন নিত্যানন্দ শুন হরিদাস,
সর্বত্র আমার আজ্ঞা করহ প্রকাশ।
প্রতি ঘরে ঘরে গিয়া কর এই ভিক্ষা,
বল কৃষ্ণ ভজ কৃষ্ণ কর কৃষ্ণ শিক্ষা।।


মহাপ্রভুর নির্দেশ মত নিত্যানন্দ প্রভু ও হরিদাস ঠাকুর নদীয়ার ঘরে ঘরে গিয়ে এইভাবে হরিনামের প্রচার করতে লাগলেন।
 
একদিন এক নদিয়াবাসী মহাপ্রভুর নিকট বিচার দিলেন যে,প্রতিদিন নিত্যানন্দ মদের দোকানে যায় আর সেখানে অনেকক্ষন বসে বসে আড্ডা দেন। এই তোদের হরিনাম।মহাপ্রভু জানতেন কেন নিত্যা নন্দ শুরিখানায় যায়।তাই তিনি তাকে বললেন,


''যদ্যপি নিত্যানন্দ রোজ শুরিখানায় যায়,
তদ্যপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়''




নবদ্বীপের ত্রাস দুই ভাই জগাই-মাধাই সারাদিন কাজীর খাজনা বিনাদায়কারীদের পিটিয়ে সন্ধ্যা বেলায় শুরিখানায় মাথা ঠান্ডা করতে যায়।সেদিন শুরিখানায় গিয়ে অবাক কেউ নেই।শুরিখানার মহাজন দুই ভাইকে বিচার দিলেন,''রোজ নিত্যানন্দ এসে আমার খদ্দেদের ধরে নিয়ে নগর কীর্তন করে।এইভাবে চললে শুরিখানা বন্ধ করে দিতে হবে''।জগাই-মাধাই এর আগেও শুনেছে কিন্তু চিন্তা করল,''ওরা কোথায়,আর কোথা গেলে ওদের পাব''

একদিন গঙ্গার পাড়ে এই দুই মহাপাপী মদ্যপানে বিভোর হয়ে হাতে শুরির কলসি নিয়ে হেলেদুলে হেটে চলছে। যাকে পাচ্ছে তাকেই অপমান করছে। সবাই ভয়ে ভয়ে তাদের থেকে দুরে অথবা উল্টো ভাবে চলতে লাগল।দয়াল ঠাকুর নিত্যানন্দ প্রভু বিচার করলেন যে, 'এই দুজনকে অবশ্যই উদ্ধার করতে হবে''।নিত্যানন্দ প্রভু তাদের সম্মুক্ষে এসে উপস্থিত হলেন এবং মহাপ্রভুর আজ্ঞা জ্ঞাপন করলেন,''একবার হরিবোল বল।বল হরেকৃষ্ণ''।


প্রিয় কৃষ্ণ ভক্ত আমরা কৃষ্ণ কথা গুলো আমরা সংগ্রহিত করি শুধু মাত্র আপনাদের মাঝে কৃষ্ণ প্রেম ভক্তি জাগানোর লক্ষে। যাতে করে সবাই নিজের ধর্মের কথা জানতে পারে ও কৃষ্ণ প্রেম ভক্তি হৃদয়ে জাগ্রত হয়। আমাদের যে কোনো রকম ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। হরে কৃষ্ণ......


দুই মাতাল নিত্যানন্দ প্রভুর আদেশ শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল।আরক্ত নয়নে,''এই তোর নাম কি?

''নিত্যানন্দ প্রভু জবাব দিলেন,
''আমি ভিখারী নাম অবধুত''
জগাই-মাধাই বলল,
''তুই কি করতে বলছিস''?
 
নিত্যানন্দ প্রভু বললেন,''আমি হরিনাম করতে বলেছি''।দুই ভাই বলল,''ও তোরা মদের আড্ডা নষ্ট করেছিস,তোরাই ব্রাম্মনদের ধর্ম বিনাশ করতেছিস ?শালা আবার আমাদের প্রতি উপদেশ দিস'',এই বলেই হাতের কলসি নিত্যানন্দ প্রভুর মাথায় ছুড়ে মারল। ঢিলের আঘাতে নিত্যানন্দ প্রভুর মাথা দিয়ে দর্‌ দর্‌ করে রক্ত পড়তে লাগল।

তবুও নিত্যানন্দ প্রভু অনুনয় করতে লাগল,''আমায় মেরেছিস তাতে ক্ষতি নেই। তোরা একবার হরি হরি বল''। মাধাই পুনরায় মারতে উদ্যত হল। এদিকে হরিদাস মহাপ্রভুকে খবর দিয়ে দিলেন কি ঘটতে চলছে।

মহাপ্রভু সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত হলেন।নিত্যা নন্দ প্রভুর মাথায় রক্ত দেখে মহাপ্রভু রাগান্বিত হয়ে সুদর্শনচক্রকে আহবান করলেন।মহাপ্রভুর আর ক্তিম দিব্য নারায়ন চতুর্ভুজরুপ দৃষ্টিতে আর সুদর্শনচক্র আহবানে পাপীষ্ট দুই ভাই প্রভুর চরনে লুটিয়ে পড়ল।জগাই কৃপা কর কৃপা কর বলে মহাপ্রভুর চরন ও মাধাই নিত্যানন্দ প্রভুর চরন তলে লুটিয়ে পড়ল।

মহাপ্রভুর প্রথমে অসম্মতি থাকলেও পতিতপাবন নিত্যানন্দ প্রভুর আগ্রহে মহাপাপী দুই ভাই জগাই মাধাই উদ্ধার হয়ে গেল। পরবর্ত্তীতে এই দুই ভাই গঙ্গার তীরে ঘাট নির্মান করে হরিনাম আন্দোলনকে আরও তরান্বিত করেছিল।।

জয় নিতাই গৌর প্রেমানন্দে হরি হরি বোল
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url