বালক শ্রীকৃষ্ণ ও কালীয় নাগ By Krishno Kotha

বালক শ্রীকৃষ্ণ ও কালীয় নাগ By Krishno Kotha
লীলা পুরুষোত্তম শ্ৰীকৃষ্ণ মধুর বৃন্দাবন লীলা উপভোগ করেছিলেন।কখনও কখনও কৃষ্ণ বলরামসহ তাঁর সখাদের সঙ্গে ,আবার কখনও বা একলাই তিনি যমুনার তীরে গাভীদের চরাতে যেতেন।ধীরে ধীরে গ্রীষ্মের আগমন হল এবং একদিন বালকেরা ও গাভীরা অত্যন্ত তৃষ্ণাৰ্ত হয়ে যমুনার জল পান করতে লাগল।সেই নদীর জল কালীয় নামে এক ভীষণ সৰ্পের বিষে বিষাক্ত হয়ে গিয়েছিল।সেই জল পান করার ফলে গোপবালক এবং গাভীরা তৎক্ষণাৎ ভূমিতে পড়ে প্ৰাণত্যাগ করল কেননা সেই জল খুবই বিষাক্ত ছিল।
সমস্ত জীবনের জীবন শ্ৰীকৃষ্ণ তখন তাদের উপর তার কৃপাদৃষ্টি নিক্ষেপ করলেন এবং সমস্ত বালক ও গাভীরা তখন পুনরুজ্জীবিত হল এবং মহা বিস্ময়ে তারা একে অপরের মুখ চাওয়া-চাওয়ি করতে লাগল।তারা বুঝতে পেরেছিল যে ,যমুনার জল পান করার ফলে তাদের মৃত্যু হয়েছিল এবং কৃষ্ণের কৃপাদৃষ্টি তাদের পুনরুজ্জীবিত করেছে।এইভাবে তারা যোগেশ্বর শ্ৰীকৃষ্ণের যোগশক্তির মৰ্ম উপলব্ধি করল।কালীয় নাগকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য উচুঁ কদম্ব গাছ থেকে শ্ৰীকৃষ্ণ যমুনায় ঝাপ দিলেন এবং এক বিশাল মত্ত হস্তীর মতো প্ৰচণ্ড শব্দ করতে করতে সেই জলে সাঁতার কাটতে লাগলেন ,ভয়ঙ্কর কালীয় সৰ্প তা শুনতে পেল।সেই প্ৰচণ্ড শব্দ তার কাছে অসহ্য হয়ে উঠল এবং সে বুঝতে পারল যে ,কেউ তার গৃহ আক্ৰমণ করার আয়োজন করছে।সে তৎক্ষণাৎ সেখান থেকে বেরিয়ে এসে শ্ৰীকৃষ্ণের সম্মুখীন হল।

কালীয় দেখল , শ্ৰীকৃষ্ণের দেহ এত কোমল এবং সুন্দর যে , তা দৰ্শনীয়ই বটে।তার অঙ্গদকান্তি বৰ্ষার জলভরা মেঘের মতো ,তার পদযুগল পদ্মফুলের মতো , তিনি শ্ৰীবৎস মণিমাণিক্য পীতবসন ভূষিত ,তার অপূর্ব এবং সুন্দর মুখমণ্ডল শরৎকালের সকালের মতো হাস্যোজল এবং প্রচণ্ড শক্তিতে তিনি যমুনার জলে ক্ৰীড়ারত।শ্ৰীকৃষ্ণের এই অপূর্ব সুন্দর রুপ দৰ্শন করা সত্ত্বেও কালীয় তার হৃদয়ে প্ৰচণ্ড ক্ৰোধ অনুভব করল এবং তার দেহের দ্বারা সে তৎক্ষণাৎ কৃষ্ণকে বেষ্টন করল।কৃষ্ণের যে সমস্ত সহচর গোপবালক , তাদের আত্মা , আত্মীয় , অৰ্থ কলত্ৰ , কাম প্ৰভৃতি সব কিছুই কৃষ্ণকে সমৰ্পণ করেছিল ,তারা শ্ৰীকৃষ্ণকে কালীয়ের দেহের দ্বারা পরিবেষ্টিত এবং নিশ্চেষ্ট দেখে অত্যন্ত আর্ত হয়ে , দুঃখ , অনুশোচনা এবং ভয়ে হতচেতন হয়ে ভূতলে পতিত হল।ধেনু ,বৃষ এবং বৎসরাও কৃষ্ণের এই অবস্থা দেখে দুঃখ এবং ভয়ে রোদন করতে লাগল।
মা যশোদা এসেই যমুনায় ঝাপ দিতে চাইলেন।কিন্তু তাকে যখন বাধা দেওয়া হল ,তখন তিনি মূৰ্ছিত হয়ে পড়লেন।অন্য যে সমস্ত আত্মীয়েরা সমভাবে শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলেন ,তাদের চোখ দিয়ে বৰ্ষার ধারার মতো অশ্ৰু ঝরে পড়তে লাগল এবং মা যশোদার চেতনা ফিরিয়ে আনার জন্য তঁরা উচ্চস্বরে কৃষ্ণের লীলাসমূহ কীৰ্তন করতে লাগলেন।আবার মৃতের মতো নিশ্চল হয়ে পড়ে ছিলেন ,কেননা তার সমস্ত চেতনা কৃষ্ণের মুখোরাবিন্দে একাগ্রীভূত হয়েছিল।নন্দ মহারাজ এবং অন্য সকলে ,যারা তাদের প্রাণ পৰ্যন্ত কৃষ্ণকে নিবেদন করেছিলেন তারাও কৃষ্ণকে উদ্ধার করার জন্য যমুনায় প্রবেশ করতে চাইলেন।কিন্তু বলরাম তাদের বাধা দিলেন,কেননা তিনি জানতেন যে,কৃষ্ণের কোন বিপদের সম্ভাবনাই নেই।

এই সাইটের সবস্ত কৃষ্ণ কথা সংগ্রহিত .................ভুল ক্ষমা করবেন।শুধু মাত্র কৃষ্ণ ভক্তি ছড়িয়ে দেয়ার জন্য আমরা সংগ্রহ করে থাকি।আমাদের কৃষ্ণ কথা সাইটে এসে কৃষ্ণ কথা  পড়ে  যদি কোনো রকম কিছু জানতে পারেন।তাহলে আমাদের সপ্ন পূরণ হবে।আপনার অনুভূতি কমেন্টর মাধ্যমে আমাদের জানাবেন।

ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দুই ঘন্টার মত কালীয়কে ব্যাস্ত রেখে তার শক্তি ক্ষয় করে,তিনি তার আসল শক্তিরুপে গরুড় যেমন
সর্পের উপর ঝাপিয়ে পরে তেমনি করে কালীয়কে আক্রমন করল।কালীয় নাগ অজস্র বিষ উদগীরন করে,দংশন করে কৃষ্ণকে কিছুই করতে পারল না।তখন কৃষ্ণ কালীয়ের মাথায় বৈদিক নৃত্য করতে লাগল ও ভগবানের পদাঘাতে ভগ্নমস্তক এবং মূৰ্ছিত কালীয়কে যুদ্ব পরিত্যাগ করল।কালীয় বুঝতে পারল কৃষ্ণ সর্বশক্তিমান শ্রীহরি।দুর্বল কালীয় ধীরে ধীরে একটু শক্তি সঞ্চয় করে অতি কষ্ট নিঃশ্বাস পরিত্যাগ করে কৃতাঞ্জলি সহকারে শ্ৰীকৃষ্ণকে বলতে লাগল,হে নাথ , আমরা সৰ্পজাতি ,তমোগুণের অন্ধকারাচ্ছন্ন প্রদেশে জন্ম হওয়ার ফলে আমরা খল ,তমোপ্রকৃতি এবং ক্ৰোধশীল।

হে প্ৰভু ,আপনি জানেন যে ,জীব যদিও তার স্বভাবের বশবৰ্তী হয়েই একদেহ থেকে অন্য দেহে দেহান্তরিত হয় ,তবুও সেই স্বভাব পরিত্যাগ করা অত্যন্ত কঠিন।কালীয় বলতে লাগল ,হে প্ৰভু ,আপনি বিভিন্ন স্বভাব , বীৰ্য ,ওজ ,যোনি বীজ , আশয় এবং আকৃতিযুক্ত এই গুণজাত বিশ্বের সৃষ্টি করেছেন।হে প্ৰভু ,আমি সৰ্পরুপে জন্ম গ্রহণ করেছি।তাই জন্মাবধি আমি অতিশয় কোপনস্বভাব অতএব আপনার কৃপা ব্যতীত কিভাবে আমি আমার এই স্বভাব বৰ্জন করব ?কিভাবে আপনার দুস্তর মায়া ত্যাগ করব ?আপনার মায়ার প্রভাবেই আমরা এই জড় জগতের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আছি।হে প্ৰভু ,কৃপা করে আপনি আমার স্বভাবজাত অপরাধগুলি ক্ষমা করুন,নয়তো আপনি আপনার ইচ্ছা অনুসারে আমাকে দণ্ড দিন বা অনুগ্রহ করুন।সেই কথা শুনে একটি ছোট মনুষ্য শিশুরুপে লীলাপরায়ণ পরমেশ্বর ভগবান কালীয় সৰ্পক আদেশ দিলেন ,তুমি এক্ষুনি এই স্থান পরিত্যাগ করে সমুদ্রে গমন কর।তুমি আর এখানে এক মুহূৰ্তও থেকো না।তুমি তোমার স্ত্রী, পুত্র এবং তোমার সমস্ত সম্পত্তি তোমার সঙ্গে নিয়ে যেতে পার।গাভী এবং মনুষ্যেরা নির্বিঘ্নে এই জল পান করুক।

ভগবান তখন ঘোষণা করলেন যে,কালীয়ের প্রতি এই নিৰ্দেশ যদি সকলে শ্ৰবণ এবং কীর্তন করে ,তা হলে কালীয় সর্প থেকে আর তাদের কোন ভয় থাকবে না ।কালীয় সৰ্পের প্রতি এই দণ্ডবিধানের কাহিনী যে শ্ৰবণ করে ,তার আর হিংস্ৰ সৰ্প থেকে কোন ভয় থাকবে না।ভগবান আরও ঘোষণা করলেন ,এই কালীয় হ্রদের যেখানে আমার গোপসখারা এবং আমি স্নান করেছি , সেখানে স্নান করে অথবা একদিন উপবাস করে এই হ্ৰদের জল দিয়ে কেউ যদি পিতৃপুরুষের তৰ্পণ করেন , তা হলে তিনি সব রকমের পাপ থেকে মুক্ত হবেন।ভগবান কালীয়কে আশ্বাস দিলেন ,যে গরুড়ের ভয়ে রমনক দ্বীপ ত্যাগ করে এই হ্ৰদ আশ্ৰয় করে ছিলে,সেই গরুড় তোমার মস্তকে আমার পদচিহ্ন দেখে আর তোমাকে ভক্ষণ করবে না।

"হরে"কৃষ্ণ"হরে"কৃষ্ণ"কৃষ্ণ"কৃষ্ণ"হরে"হরে" "হরে"রাম"হরে"রাম"রাম"রাম"হরে"হরে"
"হরে"কৃষ্ণ"হরে"কৃষ্ণ"কৃষ্ণ"কৃষ্ণ"হরে"হরে" "হরে"রাম"হরে"রাম"রাম"রাম"হরে"হরে"
"হরে"কৃষ্ণ"হরে"কৃষ্ণ"কৃষ্ণ"কৃষ্ণ"হরে"হরে" "হরে"রাম"হরে"রাম"রাম"রাম"হরে"হরে"
"হরে"কৃষ্ণ"হরে"কৃষ্ণ"কৃষ্ণ"কৃষ্ণ"হরে"হরে" "হরে"রাম"হরে"রাম"রাম"রাম"হরে"হরে"
"হরে"কৃষ্ণ"হরে"কৃষ্ণ"কৃষ্ণ"কৃষ্ণ"হরে"হরে" "হরে"রাম"হরে"রাম"রাম"রাম"হরে"হরে"
Next Post Previous Post